“যেমন বুনো ওল, তেমনি বাঘা তেতুল” প্রবাদটার সাথে সাথে বাংলাদেশের বুনো ওলের জাতটা হারিয়ে যেতে বসেছে। এর চুলকানী গুনের আড়ালে যে দেশি ও খাটি স্বাদ লুকিয়ে আছে তা সকলে আবিষ্কার করতে পারলো না। যাই হোক, দেশি ওলের পরিবর্তে বিদেশী ওল দখল করে নিয়েছে বাজারের একটি বড় অংশ। জায়গা করে নিয়েছে কৃষকের মন। কারন বিদেশি ওল কচু চাষ আজ বানিজ্যিকভাবে লাভজনক।
বহু কৃষককের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছে এই ওল। আর তা ঘুরাবেই না কেনো, পোকা-মাকড়ের বালাই নাই, রোগ-বালাই কম এমন কি ছাগলেও এ গাছ খায় না। পরিত্যাক্ত আধা ছায়া জায়গাতেও এটি হয়, (অবশ্য রোদ্রে ফলন ভালো হয়।) এক কথাই রিস্ক বা ধরা খাওয়ার কোনো উপায় নাই। তবে কৃষক যদি নিতান্তই অলস হয়, তাহলে তার কথা বলতে পারছি না। যারা কৃষিকাজে নতুন আসছেন, তাদের জন্য ওল চাষ নিরাপদ।
ওলকচুর জাত
দেশে অনেক ধরনের ওল চাষ হয়ে থাকলেও বর্তমানে যে জাত গুলো বেশি চাষ করা হচ্ছে সেগুলো হলো- ১। মাদ্রাজী ওলকচু ২। বারি ওলকচু
মাদ্রাজী ওলকচু
“মাদ্রাজী” ওলের চাহিদা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। খেতে নরম ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে চাহিদা বেশি। প্রতিটা গাছে ৭ থেকে ১৫ কেজী পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। আবহাওয়া ও পরিচর্যা ভালো হলে বিঘায় ১৫০ মন পর্যন্ত ফলন হয়ে থাকে।
বারি ওলকচু
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণার বারি ওল-১ ও বারি ওল-২ ও লাগানো যেতে পারে। বারি ওল-১ জাতের ফলন হেক্টর প্রতি ৪৫-৫৫ মে.টন আর বারি ওল-২ জাতের ফলন ৩৫-৪৫ মে.টন।
- হাইব্রিড তরমুজ বিগ ফ্যামিলি Watermelon Big Family (১০০ গ্রাম)3,400.00৳
- হাইব্রিড তরমুজ সুইট ড্রাগন Sweet Dragon watermelon (১০০ গ্রাম) কৌটা3,200.00৳
- হাইব্রিড তরমুজ ড্রাগন বা ডোরাকাটা সুইট ক্রাঞ্চ Sweet Crunch Watermelon (১০০ গ্রাম)Product on sale3,200.00৳
- হাইব্রিড তরমুজ গ্রীণ ডায়মন্ড Green Diamond watermelon (১০০ গ্রাম) কৌটা3,000.00৳
ওল রোপনের সঠিক পদ্ধতি ও সময়
সাধারণত চৈত্র-বৈশাখ মাসে ওল লাগানো হলেও ভালো দাম পেতে হলে আগাম চাষের জন্য মাঘ-ফাল্গুন মাসে লাগানো উত্তম। সব ধরনের মাটিতেই ওল চাষ করা যায়, তবে বেলে-দোআশ মাটিতে ভালো ফলন হবে। ওল বা মুখা কার্বেন্ডাজিমে শোধন করে উচু জমি, যেখানে পানি জমে থাকে না এমন জায়গায় লাগাতে হবে। ওলের বেছন বড় হলে ফলনও ভালো হয়। ৪০০-৮০০ গ্রাম ওজনের বেছন লাগানো উত্তম। ওলের বেছন ছোট হলে ৪০-৫০ সে.মি. দুরে দুরে লাগাতে হবে আর মাঝারী হলে ৭০-৮০ সে.মি. দুরে , আর বড় হলে এক-দেড় মিটার দুরে গর্ত করে লাগাতে হবে।
পরিচর্যা ও সার প্রয়োগ
নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার, গোড়া উচু করে দেয়া ও গোড়ায় খড় বা আচ্ছাদন দিয়ে ঢেকে দিলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। জৈব সার বেশি ব্যবহার করা ভালো। তবে রাসায়নিক সার যেমন ইউরিয়া, পটাশ, টিএসপি সারও কিছু দেওয়া যায়।
রোগ-বালাই
ওল গাছে তেমন কোনো রোগ হয় না, তবে পাতা ও কান্ড পচা রোগ দেখা যেতে পারে। এর জন্য ডায়থেন এম-৪৫ ছত্রাকনাষকটি দেয়া যেতে পারে। গোড়া পচন রোগটা ফলনে কিছুটা ক্ষতি করতে পারে তাই কার্বেন্ডাজিব দিয়ে বীজ আগেই শোধন করে নিতে হবে।
ফলন সংগ্রহ
গাছ লাগানোর ৭-৯ মাস পর যখন ৮০% গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাবে, তখন ওল সংগ্রহ করতে হবে। ওলের চার পাশের ছোট ছোট মুখাগুলো পরবর্তী বছরে বেছন তৈরীর জন্য রেখে দিতে হবে। সেগুলো প্রথম বছরে ঘন করে লাগিয়ে বেছন তৈরী করে দ্বিতীয় বছরে বানিজ্যিকভাবে লাগাতে হবে। অনেকে বলে ওল চাষ লটারীর মতো। ১ কেজী লাগিয়ে ১০ কেজী বা এর চেয়েও বেশি পাওয়া যায়। ইতিমধ্যে বহু চাষী লাভবান হয়ে ওল চাষের প্রতি ঝুকে পড়েছে। আমরাও ওল কচু চাষ করে লাভবান হতে পারি।
লেখক
মোঃ মহিউদ্দিন অনিক
রাজশাহী
এই লেখকের অন্য লেখাগুলোঃ