শোল মাছের বৈজ্ঞানিক নাম হলো (Channa Stniata) ইংরেজি নাম হলো ( snakehead murrel ) Channidae পরিবারের Channa গত্রের একটি স্বাদু পানির মাছ। আমাদের দেশে আগে খাল-বিল, হাওড়-বাওড়, জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে দেখতে পাওয়া যেত। বর্তমানে এ মাছটি বিলুপ্ত প্রায়। দিন দিন এ মাছটি হারিয়ে যেতে বসেছে। শোল মাছ রাক্ষুসে প্রজাতির মাছ।
এ মাছের বাজার মুল্য বেশি প্রতি কেজি মাছের দাম প্রায় ৩০০টাকা। বানিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করতে গেলে শোল মাছ চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে।
শোল মাছ সব ধরনের প্রতিকুল পরিস্থিতি ও দুর্যোগ মোকাবেলা করে নিজেকে টিকিযে রাখতে পারে। মা শোল মাছ নিজেই ডিম র্নাসিং করে থাকে নিজের মত করে ও বাচ্চাকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করে থাকে।
সঠিকভাবে শোল মাছ চাষ পদ্ধতি
১। সনাতন পদ্ধতি ২। আধা নিবির পদ্ধতি ৩। নিবির পদ্ধতি
-
Product on saleBio-C Complex, মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ভিটামিন বায়ো সি কম্পেলেক্স130.00৳ – 950.00৳
-
Product on saleইন-জাইম প্লাস, মাছ ও চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারক (Fish Disease Preventer)140.00৳ – 950.00৳
-
Biomin B+C, মাছের শক্তি বৃদ্ধিকারী ভিটামিন বায়োমিন বি প্লাস সি160.00৳ – 750.00৳
-
Product on saleParatic-RS: পরজীবী দমণকারী, মাছ ও চিংড়ির উকুননাশক (৫৫ মিলি)200.00৳
১। সনাতন পদ্ধতি
এ পদ্ধতিতে মিশ্র ভাবে শোল মাছ চাষ করা হয়ে থাকে প্রতি শতাংশে ৪-৫টি মাছ দেওয়া যেতে পারে। ছোট অবস্থায় এরা জু প্লাংকটন খেয়ে জীবন ধারন করে থাকে। মাছ একটু বড় হলে পুকুরের দেশি ছোট মাছ ও ছোট কার্প জাতীয় মাছ খেয়ে বড় হতে থাকে। এভাবে চাষ করলে খামারি লাভবান হতে পারবে না। কারন শোল মাছ একটু বড় হলে পুকুরের অন্য মাছ খেয়ে সাবাড় করে থাকে । পুকুরে অন্য মাছ কমার কারনে খামারী খতির স্মুখিন হয়ে থাকে।
২। আধা নিবির পদ্ধতি
আধানিবিড় পদ্ধতি আবার দুই ভাগে ভাগ ।
ক। বাহির থেকে ছোট ছোট মাছ দিয়ে চাষ পদ্ধতি, খ। রেডি ফিড বা সম্পুরক খাদ্য দিয়ে চাষ পদ্ধতি
(ক) বাহির থেকে ছোট ছোট মাছ দিয়ে চাষ পদ্ধতিঃ-
এ পদ্ধতিতে প্রতি শতাংশে ১৫ থেকে ২০টি মাছ দেওয়া যেতে পারে। পোনা মাছ জু প্লাংকটন খেয়ে বড় হতে থাকে। পরবর্তীতে ছোট ছোট মাছ বাহির থেকে ক্রয় করে খাবার হিসাবে দেওয় হয়। এবং পুকুরে থাকা ছোট ছোট মাছ ধরে ধরে খেয়ে থাকে। ৬ থেকে ৭ মাস বয়সে বিক্রয় করার উপযোগি হয়ে থাকে।
(খ) রেডি ফিড বা সম্পুরক খাদ্য দিয়ে চাষ পদ্ধতিঃ-
এই পদ্ধতি বেশি জনপ্রিয় আমাদের দেশে । শতাংশে ৩০০ থেকে ১০০০ টি মাছ দেওয়া যেতে পারে ।সম্পুরক খাদ্য দিয়ে শোল মাছ চাষ করা অন্য মাছ চাস থেকে অনেকটা ভিন্ন। বিশেষ করে খাদ্য ব্যবস্থা, আমরা জানি শোল মাছ রাক্ষুসে মাছ সে অন্য মাছ ও প্রাণী কনা খেয়ে বেচে থাকে।
শোল মাছের পোনার জন্য এক ধরনের প্রাণী কনা (ময়না) চাষ করে পোনা মাছকে খেতে দিতে হয় । এরপরে ময়নার সাথে নার্সারি খাবার দিতে হয়। ধীরে ধীরে সম্পুরক খাবার বাড়িয়ে ময়না কমিয়ে শতভাগ ফিড খাদ্য নির্ভর করতে হয়। ফিড খাদ্যের গুনগত মানের উপর ভিত্তি করে শোল মাছ ৪.৫ থেকে ৬ মাসে বিক্রয়ের উপযোগি হয়ো থাকে। এটি একটি লাভজনক পদ্ধতি।
৩। নিবির পদ্ধতিঃ-
এ পদ্ধতিতে পুকুরে প্রতি শতাংশে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টি শোল মাছের পোনা দেওয়া যেতে পারে। খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পুরক খাদ্যের মতই সমর্ম্পুন বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি গুলো ব্যবহার করে মাছ চাষ করা হয়। খাদ্যের গুনগত মানের উপর ভিত্তি করে শোল মাছ ৫ থেকে ৭ মাসে বিক্রয়ের উপযোগি হয়। বর্তমানে আমাদের দেশে এই পদ্ধতির চাষ নেই।
পুকুর প্রস্তুতির কৌশল
শোল মাছ যে কোন পুকুরেই চাষ করা সম্ভব। শোল মাছ কে তার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। যে পুকুরে শোল মাছ চাষ করবেন সে পুকুরে কচুরি পানা ও কমলি লতা থাকতে হবে। শোল মাছ আড়ালে থাকতে পছন্দ করে। খেয়াল রাখতে হবে কচুরি পানা যেন পুকুরে ভরে না যায় এজন্য পুকুরের তিন ভাগের এক ভাগ কচুরি পানা থাকবে। পুকুরে চার পাশে কমপক্ষে ৫ ফুট উচ্চতা করে জাল দিয়ে বেড়া দিতে হবে। কারন বর্ষার সময় শোল মাছ লাফ দিয়ে পুকুর থেকে বেড় হয়ে যায়।
শোল মাছের পোনা মজুত
আমাদের দেশে বর্তমানে বানিজ্যিক ভাবে শোল মাছ চাষ শুরু হয়েছে। অনেকেই শোল মাছের পোনা উৎপাদন করে বিক্রয় করছে। সে সকল হ্যাচারি থেকে শোল মাছের পোনা সংগ্রহ করা যেতে পারে। তা ছাড়া প্রকিতিক ভাবে শোল মাছের পোনা সংগ্রহের দিকে জোর দিতে । শোল মাছের বৈশাখ মাস প্রজনন মৌসুম শুরু হয়। বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে বাচ্চা দিতে থাকে। সে সময়ে খাল-বিল, হাওড়-বাওড়, পুকুরে থেকে সপ্তাখানেক বয়সের বাচ্চা সংগ্রহ করে পুকুর বা চৌবাচ্চায় ছাড়তে হয়। একটি পাপ্ত বয়স্কে শোল মাছ ২.৫- ৩ ফিট পযন্ত লম্বা হয়ে থাকে।
পোনা মাছের উপোযু্ক্ত খাদ্য
পুকুরে শোল মাছের পোনা ছোট অবস্থায় জু প্লাংকটন (প্রানী কনা) খেয়ে জীবন ধারন করে থাকে। ছোট পোনাকে শুঁটকি মাছের গুড়া খেতে দিতে হবে । শুঁটকি মাছের গুড়া হিসাবে চিংড়ি মাছের গুড়া ভালো ভাবে পিশিয়ে দিতে হবে। এভাবে ১৫ দিন খাওয়ালে পোনা গুলো প্রায় ২-৩ ইঞ্চি সাইজ হবে।
আর পোনা যখন ২-৩ ইঞ্চি হবে তখন পোনাকে খাবার হিসেবে কার্প জাতীয় মাছের ধানী পোনা দিতে হবে। পাশা পাশি বাজার থেকে উচ্চমানের প্রেটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে দিতে হবে। কার্প জাতীয় ধানী পোনার সাথে ছোট ছোট ব্যাঙ ও ব্যাঙাচি দেওয়া যেতে পারে। শোল মাছ যখন বড় হয়ে যাবে তখন ছোট ছোট মাছ খেতে দিতে হবে। ৬ মাস বয়সে এক একটা শোল মাছের ওজন হবে ৭০০ থেকে ১০০০ গ্রাম পর্যন্ত।
সম্ভাব্য রোগ বালাই
শোল মাছের সে ভাবে কোন রোগ-বালাইদেখা যায় না। তবে শীতকালে শোল মাছে ক্ষত রোগ দেখা যায়। সেই সময়ে পুকুরে বিশেষ যত্ন নিতে হবে এবং একজন মৎস কর্মকতার পরামর্শ নিতে হবে।