মুরগির চেয়ে হাঁসের রোগ কম হয়ে থাকে। যদিও হাঁস রোগ থেকে মুক্ত নয়। কিছু কিছু রোগ, সফল হাঁস পালনের প্রধান বাধা হয়ে দাড়ায়। হাঁস যে কোন বয়সেই রোগ দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে। কিছু রোগের মৃত্যুহার বেশি হয়। সাধারণত একটা হাঁস থেকে অন্য আরেকটা হাঁসে রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। ডাক প্লেগ হাঁসের একটি মারাত্নক সংক্রামক রোগ।
ডাকপ্লেগ নামক এক প্রকার ভাইরাস দ্বারা এ রোগ হয়। এ রোগটি ডাক ভাইরাল এন্টারাইটিসও বলা হয়ে থাকে। সর্ব প্রথম ১৯২৩ সালে নেদারল্যান্ডে বাউডেট নামক বিজ্ঞানী হাঁসের মরক হিসাবে রোগটি সনাক্ত করেণ। বর্তমানে পৃথিবীর প্রাং সব দেশেই এ রোগটি দেখা যায়। হাঁস পালন করার আগে হাঁস পালন পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে ও প্রশিক্ষন নিয়ে শুরু করা জরুরি। নিম্নে হাঁসের ডাক প্লেগ রোগ নিয়ে আলোচনা করা হলো-
ডাক প্লেগ রোগের লক্ষন
- আক্রন্ত হাঁসের চোখ ও নাক দিয়ে তরল পদার্থ নিঃসৃত হয়
- হাঁসের ক্ষুধা কমে যায়। আক্রান্ত হাঁস বার বার পানি পান করে
- হাঁস আলো দেখলে ভয় পায়। চোখের ঝিল্লির প্রদাহের কারণে হাঁস চোখ বন্ধ করে রাখে
- ডিম দেয়া হাঁসের ডিম দেয়া কমে আসে। সব সময় মাথা নিচু করে রাখে
- আক্রান্ত হহাঁসের ডায়রিয়া দেখা যায়
- ডায়রিয়া হলে লেজের আশেপাশে লেগে থাকে
- ডাক প্লেগ রোগে আক্রান্ত হাঁসের হঠাৎ করে মৃত্যু হয়
- এ রোগ হলে মৃত্যুহার ৫ থেকে ১০০% পর্যন্ত।
ডাক প্লেগ রোগের চিকিৎসা
ব্যাকটিরিয়ার সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এন্টিবায়োটিক যেমন- সিপ্রোফ্লক্সাসিন, এনরোফ্লক্সাসিন, নরফ্লক্সাসিন ইত্যাদি। এর যে কোন একটি দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। হাঁসের ভাইরসি জনিত রোগের সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই।
হাঁসের টিকা ব্যবহার বিধি
- ছোট কাঁচের ভায়ালে ১০০ মাত্রা টিকা থাকে
- টিকা ব্যবহার করার আগে ডিস্টিল পানি ও পরিস্কার পাত্র এবং সিরিঞ্জ নিডিল প্রয়োজন
- পরিস্কার পাত্রে ১০০ এমএল ডিস্টিল পানি মেপে নিতে হবে
- এই পানি কিছুটা সিরিঞ্জের সাহায়্যে ভায়ালে প্রবেশ করাতে হবে
- ভায়ালের টিকা ভালভাবে মিশ্রিত্র হলে ডিস্টিল পানির সাথে আবার ভালভাবে মিশিয়ে নিতে হবে
- মিশ্রিত টিকা হাঁসের বুকের মাংসে ১ এমএল করে ইনজেকশন দিতে হয়
- প্রথম বার টিকা দিতে হয় ২১ থেকে ২৮ দিন বয়সে
- এই টিকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় থাকে ৬ মাস পর্যন্ত
- দ্বিতীয় বার টিকা দিতে হয় ৬ মাস পর
- তবে ৪ থেকে ৫ মাস পর পর পরবর্তী টিকা দেওয়া ভাল
- খামারে রোগ দেখা দিলে সুস্থ হাঁসগুলোকে আলাদা করে টিকা দিতে হয় ।
যে কোন রোগের চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করাটা জরুরী। আগে থেকে হাঁসের রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে।