1
কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে মাছ চাষ

রাজশাহী অঞ্চলের চাষীরা ভাগ্য বদলাচ্ছে কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে । এই পদ্ধতির মাধ্যমে কম সময়ে মাছ বড় হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হচ্ছে তারা। মূলত অনেক কম সময়ে মাছের সাইজ বাড়াতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করছেন এই অঞ্চলের চাষীরা।

আধা কেজি বা তার কাছাকাছি ওজনের মাছ পুকুরে ছেড়ে সুষম খাবার নিয়মিত যত্ন  নেবার ফলে মাছ দ্রূত মাছ দ্বিগুণ বা তিনগুণ হচ্ছে। আর এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে ভাগ্য ফিরতে শুরু করেছে অনেক মাছ চাষীদের।

কার্প ফ্যাটেনিং মাছ চাষ কাকে বলে

অতি অল্প সময়ের মধ্যে মাছ অনেক বড় করার পদ্ধতিকে কার্প ফ্যাটেনিং বলা হয়। পুকুরে মাছ এক বছরেই বড় করা হয় ৬ থেকে ৭ কেজি পর্যন্ত। আর ১৫ থেকে ১৬ মাসের মধ্যে মাছের ওজন হয়ে থাকে ৮ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত।

কার্প ফ্যাটেনিংয়ের বৈশিষ্ট্য

  • অত্যন্ত অল্প সংখ্যায় পোনা ছাড়া।
  • সব বড় সাইজ পোনা ছাড়া
  • পোনা একই সমানের হয়
  • সুষম ও গুনগত মান সম্পন্ন খাবার দেওয়া
  • ভাল পরিবেশ ও সঠিক পরিচর্যা করে দ্রুত মাছ বড় করা
  • মাছ বড় সাইজের হওয়ায় উচ্চ বাজার মূল্য পাওয়া যায়
  • মাছ উৎপাদন শেষে জীবন্ত মাছ বাজার জাত করার কারণে উচ্চ বাজার মূল্য প্রাপ্তি

কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতির গুরুত্বপূর্ন বিষয়গুলি

মাছের ঘনত্ব কম থাকায় যথেষ্ঠ অক্সিজেন থাকে। জমাকৃত মল-মুত্রের পরিমানও কম হয়। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করার কারণে খাবার খরচ অনেক কম হয়ে থাকে। মাছের রোগ-বালাই ঝুকি এড়িয়ে মাছ উৎপাদন অব্যাহত রাখা যায়। বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ও মাছের মল-মুত্র শোধনের সর্বোচ্চ সুযোগ থাকে। ক্রেতার আস্থা অর্জন করা।

কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতি

এ পদ্ধতিতে মাছ পাতলা করে চাষ করা হয়। সাধারণ পদ্দতিতে মাছ ছেড়ে কিছুটা বড় হলেই বাজারজাত করা হয়। কার্প ফ্যাটেনিয়ং পদ্ধতিতে পুকুরে পাতলা করে মাছ চাষ করা হয়। এপদ্ধতিতে বিঘা প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টি রুই মাছ,মৃগেল ১৫০টি, সিলভার কার্প ৫০ টি, মিরর কার্প ২৫-৩০ টি  গ্রাস কার্প ৫টি করে চাষ করা হয়। সাধারণ ভাবে যে পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা হয় এ সংখ্যার তকুলনায় ৫-৬ গুন বেশি মাছ চাষ করা হয়।

বর্তমান সময়ে চাষীরা কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে নতুন প্রক্রিয়া যোগ করেছে। কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে কার্প জাতীয় মাছের সাথে মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছ চাষ করছে। কার্প মাছের সাথে বিঘায় ২০০০ টি মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষ করা যায়। তেলাপিয়া মাছ একেকটি বছর শেষে  এক কেজি ওজনের হয়ে থাকে।

মাছের খাদ্য প্রয়োগ

 মাছের দেহের ওজনের ১.৫-২% খাবার দিতে হবে ২৪% আমিষ সম্বলিত। 

কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতি অনুসরণ করে লাভ

কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে বছর শেষে বিঘা প্রতি ১০০০- ১২০০ কেজি মাছের উৎপাদন পাওয়া যায়। মাছ বড় হওয়ার কারণে এ সকল মাছ প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে বিক্রয় হয়ে থাকে।

এতে বিঘা প্রতি ২ লাখ ৫০ হাজার ঠাকা থেকে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাছ বিক্রয় করা সম্ভব হয়।  মৎস চাষীরা ছোট মাছ উৎপাদন করে বিঘাপ্রতি এক বছরে ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার মাছ বিক্রয় করতে পারে। কার্প ফ্যাটেনিং পদ্ধতিতে মাছ উৎপাদন করে এক দুই থেকে তিন গুন বেশি মাছের চাষ করা যাচ্ছে।

মৎস বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে বর্তমানে রাজশাহী জেলায় পুকুর রয়েছে প্রায় ৪৭ হাজার এর বেশি। আর এসকল পুকুরের চাষ করা তাজা মাছ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ হচ্ছে।

1 Comment

  1. Ahmed Shah Masud March 2, 2020 Reply

    Yes more profitable.

Leave a Comment

Your email address will not be published.

0

TOP

X