পুকুরে মলা মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা – মলা (Amblypharyngodon) দেশি প্রজাতির SIS) ছোট মাছ। মলা মাছ একটি সুস্বাদু ঔষধি গুণ সম্পন্ন মাছ। একটা সময় ছিল বর্ষা এলেই খাল বিলে এই মাছের আধিক্য দেখা যেত। খাল বা বিলে এরা দলবদ্ধভাবে করে চলাফেরা করে থাকে।
মলা মাছ সাধারণত ফাইটোপ্লাংকটন ভোজী। পুকুরে বা বদ্ধ জলাশয়ে এরা ফাইটোপ্লাংকটন এর পাশাপাশি কৃত্রিম খাবারও খেয়ে থাকে। পুকুরে মলা মাছের চাষও ইদানিং জনপ্রিয় হতে শুরু করেছে, বিশেষ করে হরমোন প্রয়োগের মাধ্যমে হ্যাচারীতে মলা মাছের রেনু উৎপাদনের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন করে পুকুরে অনায়াসে চাষ করা যায়। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি বাংলাদেশে প্রথম হ্যাচারীতে হরমোন প্রয়েগের মাধ্যমে মলা মাছের রেনু উৎপাদন সক্ষম হয়েছি।
রেনু থেকে পোনা উৎপাদন প্রযুক্তি
আমরা প্রথমে যে পুকুরে রেনুকে পরিচর্যা করব, তাকে নার্সারী পুকুর বলব। নার্সারী পুকুর কে প্রথমে বিষ প্রয়োগ করে সমস্ত অবাঞ্ছিত মাছকে মেরে ১-২ দিন পর চুন দিতে হবে। অতিরিক্ত কাঁদাযুক্ত পুকুরে শতাংশ প্রতি ১ কেজি, অপেক্ষাকৃত একটু কম কাঁদাযুক্ত পুকুরে আধা কেজি, একবারেই কম কাঁদাযুক্ত পুকুরে শতাংশ প্রতি ২৫০ গ্রাম চুন দিতে হবে। এর ৪-৫ দিন পর হাঁস পোকা মারার ঔষধ দিতে হবে। এর পর দিনই মলা মাছের রেনু পুকুরে ছাড়তে হবে।
-
Bio-C Complex, মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ভিটামিন বায়ো সি কম্পেলেক্সProduct on sale130.00৳ – 950.00৳
-
ইন-জাইম প্লাস, মাছ ও চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারক (Fish Disease Preventer)Product on sale140.00৳ – 950.00৳
-
Biomin B+C, মাছের শক্তি বৃদ্ধিকারী ভিটামিন বায়োমিন বি প্লাস সিProduct on sale200.00৳ – 1,000.00৳
-
Paratic-RS: পরজীবী দমণকারী, মাছ ও চিংড়ির উকুননাশকProduct on sale200.00৳
নার্সারি পুকুরের খাদ্য ব্যবস্থাপনা
অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে ২ ধাপ পদ্ধতিতে শতাংশ প্রতি ৫০-৮০ গ্রাম পর্যন্ত মলা মাছের রেনু ছাড়া যায়। রেনু ছাড়ার থেকে ৩ দিন পর্যন্ত হাঁসের ডিম প্রতিবারে প্রতি ৩ শতাংশে একটা করে ডিম সিদ্ধ করে ভালো করে ব্লেন্ড করে মিহি সুতার কাপড় দিয়ে ছেঁকে দিনে ২ বার প্রয়োগ করতে হবে। ৩ দিন পর থেকে পাউডার খাবার দিতে হবে। প্রতিবারে শতাংশ প্রতি ৫০ গ্রাম করে দিনে ২ বার খাবার প্রয়োগ করতে হয়। ১৫ দিন পর মলা মাছের পোনার সাইজ প্রায় ১.৫-২ সেমি হয়ে থাকে। তখনই অন্য পুকুরে স্থানান্তর করতে হবে। স্থানান্তর করার আগের দিন নার্সিং পুকুরে পটাসিয়াম পার ম্যাঙ্গানেট দিয়ে হালকা জাল টেনে দিতে হবে। তাতে মাছগুলো অন্য পুকুরে স্থানান্তরের জন্য উপযোগী হবে। অন্যথায় পোনা মারা যেতে পারে।
চাষের পুকুরে স্থানান্তর এবং মজুদ ঘনত্ব
নাসিং পুকুরে থেকে ঘন মিহি নাইলন অথবা সুতার নেট দিয়ে পোনা মাছ চাষের পুকুরে স্থানান্তর করতে হবে। সাধারণত রৌদ্রময় দিনে সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১২:৩০ পর্যন্ত স্থানান্তর করলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে। এখান চাষের পুকুর বলতে মিশ্র চাষ বুঝতে হবে। যে কোন মাছের সাথে মলা মাছের মিশ্র চাষ করা যায়। মজুদ ঘনত্ব শতাংশ প্রতি ৩০০০-৫০০০ পর্যন্ত।
মলা মাছের খাদ্য ব্যবস্থাপনা
মিশ্র চাষে মলা মাছের খাদ্য হিসাবে পুকুরে উৎপাদিত ফাইটোপ্লাংকটন খেয়ে থাকে। মিশ্র চাষে একটা সময় পুকুরে ফাইটোপ্লাংকটন এর আধিক্য কমে যায়। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য মাছের খাবার দেয়ার পাশাপাশি পাউডার খাবার দেয়া আবশ্যক। দিনে শতাংশ প্রতি ১০০-১৫০ গ্রাম পাউডার জাতীয় খাবার ২ বেলায় দিতে হবে। এভাবে ৩ মাসেই মলা মাছ বাজারজাত করা যায় অনায়াসেই।
পুকুরে মলা মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা জেনে যদি চাষীগন মলা মাছ চাষ করেন তা হলে সফল হতে পারবেন।
লেখক
এ.কে.এম.নুরুল হক
স্বত্ত্বাধিকারী- ব্রহ্মপুত্র ফিস সীড কমপ্লেক্স (হ্যাচারী),
গ্রাম: চরপুলিয়ামারী, পোস্ট অফিস: রাঘবপুর মাদ্রাসা, সদর, ময়মনসিংহ।