0
মাছ চাষে চিটাগুড় বা মোলাসেসের গুরুত্ব এবং প্রয়োগবিধি

আখ থেকে চিনি তৈরির সময় চিনি কলে যে গাড়, বা চিনির সমৃদ্ধ উপজাত পণ্য হিসাবে অতিরিক্ত যে অংশটি সংগ্রহিত হয় সেটিউ চিটাগুড়। বিভিন্ন জেলাতে চিটাগুড়কে বিভিন্ন নামে জানে যেমন – লালি, মাতগুড়, রাব ইত্যাদি। মাছ চাষে চিটাগুড় উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যবহার হচ্ছে।

চিটাগুড় মূলত খুবই ভালো একটা এনজাইম। যা মাছের মিনারেলসের ঘাটতি, শক্তি উৎপন্নতে, রুচিবর্ধক, হজমে চমৎকার কাজ করে। বিভিন্ন খাদ্যে ফার্মেন্টেশন করতে চিটাগুড় ব্যবহার হয়। প্রিবায়োটিক তৈরিতে চিটাগুড়ের ভূমিকা সর্বাধিক। চিটাগুড় ব্যবহারের কারণে পানির পিএইচ নিয়ন্ত্রনে থাকে ও কার্বন ডাই-অক্সাইড এর পরিমান হ্রাস পায়। উপকারী ব্যাক্টেরিয়া তৈরির মাধ্যমে, পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

বর্তমানে আধুনিক মাছ চাষে পানির গুনাগুন ঠিক রাখার জন্য অনেক সচেতন চাষীগণ চিটাগুড় ব্যবহার করছেন। চাষীগণ চিটাগুড় ব্যাবহার করে ফলাফল খুব ভালো পেয়েছেন এবং কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় নি। তবে অবশ্যই পুকুরে মাছ চাষে এর ব্যবহারবিধি এবং প্রয়োগ জেনে বুঝে করা উচিত।

ব্যবহার বিধি  এবং প্রয়োগ মাত্রা

ব্যবহার বিধি  এবং প্রয়োগ মাত্রা  একেক ক্ষেত্রে একেক রকম হয়ে থাকে যেমন-

  • খাবারে সরাসরি ব্যবহার 
  • ফার্মেন্টেশন তৈরিতে ব্যবহার 

খাবারে সরাসরি ব্যবহার:

খাবারে সরাসরি-১০ গ্রাম ;খাদ্য প্রয়োগের ১০ মিনিট থেকে ৮ ঘন্টা আগে অর্থ্যাৎ সকালে তৈরি কৃত খাদ্য সকাল এবং বিকেলে প্রয়োগ করতে হবে।। (পিলেট করতে  যা ভিন্নতা পায়, ফাঙ্গাস প্রতিরোধক ওষুধ প্রয়োগে, তাপে, জমাট করণে) পিলেট কৃত খাবারকে মাথায় রেখে অনেকেই পূর্বে চিটাগুড় মিশ্রিত করে রাখে যা কখনোই উচিত নয় (ফারমেন্টেশন ব্যতিত)। এতে খাদ্যে ক্ষতিকর ফাঙ্গাস, বিষক্রিয়া তৈরি হতে পারে।

ফার্মেন্টেশন তৈরিতে ব্যবহার:

ফার্মেন্টেশন তৈরিতে -১২ গ্রামমাছে ফার্মেন্টেশন খাদ্য সপ্তাহে দুদিন প্রয়োগ মাছের বৃদ্ধি তরান্বিত করবে -প্রাকৃতিক খাদ্য বাড়িয়ে দিবে। কার্বন ডাই অক্সাইড দূরীকরণে (এমোনিয়া ধ্বংসে) গভীরতা ৩-৬ ফুট পানির জন্য –৭০-১০০ গ্রাম শতাংশে।সাথে হররা টানতে হবে সকাল ১০-২ টার মধ্যে, ঠিক এসময় অন্যান্য সময়ের চাইতে পানিতে দ্রবভীত অক্সিজেন বেশি থাকে। অন্যান্য সময়ে হররা টানা সাময়িক বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে চলমান এমোনিয়া থাকা কালিন।

চিটাগুড়ের পুষ্টিগুনঃ

চিটাগুড় বহুমুখী পুষ্টিদায়ক তরল খাবার, তবে চিটাগুড় মুল্যায়িত হয় প্রচুর মিনারেল ও শক্তি হিসাবে। নিম্নে চিটাগুড়ের উপাদান ও পরিমাণের তালিকা দেওয়া হলো-

উপাদানপরিমাণ
ড্রাই ম্যাটার৭১%
শক্তিঃ৭৪.০ গ্রাম/ কেজি
অ্যাশঃ১৪.৬%
ফ্যাটঃ১.০%
ক্যালসিয়ামঃ৭৪.০ গ্রাম/ কেজি
ফসফরাসঃ৭৪.০ গ্রাম/ কেজি
ফাইবারঃ ০.১%
আয়রনঃ৭৪.০ গ্রাম/ কেজি
ম্যাগনেসিয়ামঃ৪.০ গ্রাম/ কেজি
জিংকঃ৭৪.০ গ্রাম/ কেজি
পটাশিয়ামঃ৫১.০ গ্রাম/ কেজি
ম্যাঙ্গানাজঃ৭৪.০ গ্রাম/ কেজি
প্রোটিনঃ৫.৫%

প্রতি কেজি চিটাগুড়ে বা মোলাসেসে ১৫-২০ হাজার কিলোক্যালরি শক্তি থাকে।

লেখক

রাজ গোস্বামী

প্রতীভা রাজ মৎস চারণ প্রকল্প (ফিস র্পাক)

মাহিগঞ্জ, রংপুর।

Leave a Comment

Your email address will not be published.

0

TOP

X